অলিভ অয়েলের উপকারিতা। অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
অলিভ অয়েলের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি না। আমাদের আজকের আর্টিকেলে অলিভ অয়েলের উপকারিতা সাথে সাথে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
অলিভ অয়েল অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি তেল। এটি ব্যবহারের শরীরের অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে ওজন কমাতে, রূপ চর্চায়, রান্নায় ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। আমরা আজকে অলিভ অয়েলের উপকারিতার সম্পর্কে আপনাদের জানাব।
পোস্ট সূচীপত্র: অলিভ অয়েলের উপকারিতা
- অলিভ অয়েল কি
- অলিভ অয়েল কিভাবে প্রস্তুত করা হয়
- অলিভ অয়েলের পুষ্টিগুন
- অলিভ অয়েলের উপকারিতা
- অলিভ অয়েল কিভাবে ব্যবহার করা হয়
- অলিভ অয়েলের অপকারিতা
- অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
- অলিভ অয়েল কোথায় পাওয়া যায় এবং দাম কত
- লেখকের মতামত: অলিভ অয়েলের উপকারিতা
অলিভ অয়েল কি
অলিভ অয়েল (Olive Oil) হল জলপাই ফল থেকে নিষ্কাশিত এক প্রকারের তেল। এটি রান্নার জন্য, ত্বকের যত্নে এবং ঔষধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়। অলিভ অয়েল সাধারণত কয়েকটি প্রকারে পাওয়া যায়, যেমন:
- এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল (Extra Virgin Olive Oil): এটি সবচেয়ে খাঁটি এবং উচ্চমানের অলিভ অয়েল। এতে কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়াকরণ করা হয় না, ফলে এর স্বাদ, পুষ্টিগুণ, এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশি থাকে।
- ভার্জিন অলিভ অয়েল (Virgin Olive Oil): এটি কিছুটা কম বিশুদ্ধ হলেও এক্সট্রা ভার্জিনের মতোই স্বাস্থ্যকর।
- রিফাইন্ড অলিভ অয়েল (Refined Olive Oil): এই ধরনের তেল প্রক্রিয়াকৃত হয়, ফলে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যায়।
- লাইট অলিভ অয়েল (Light Olive Oil): এতে প্রক্রিয়াকরণের ফলে স্বাদ হালকা হয় এবং এটি অন্যান্য অলিভ অয়েলের তুলনায় কম ঘন।
অলিভ অয়েল প্রধানত রান্নায় সালাদ ড্রেসিং, ভাজার কাজে ব্যবহৃত হয়, আবার ত্বক ও চুলের যত্নেও এটি জনপ্রিয়। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি হার্টের জন্যও ভালো বলে মনে করা হয়।
অলিভ অয়েল কিভাবে প্রস্তুত করা হয়
অলিভ অয়েল প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া বেশ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়, যা জলপাই ফলের থেকে তেল নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রক্রিয়াটি মূলত নিম্নলিখিত ধাপগুলো অন্তর্ভুক্ত করে:
জলপাই ফল সংগ্রহ করা: জলপাই ফল (Olives) পাকার পর সংগ্রহ করা হয়। পাকা জলপাই ফল সাধারণত সবুজ বা কালো রঙের হয়। ফলগুলোকে হাতে বা যন্ত্রের সাহায্যে সংগ্রহ করা হয়।
পরিষ্কার করা: সংগ্রহ করা জলপাই ফলগুলো ধুলা-ময়লা, পাতা এবং অন্যান্য অমেধ্য সরানোর জন্য ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়।
পিষে ফেলা: পরিষ্কার করা জলপাই ফলগুলোকে পিষে একটি পেস্টে রূপান্তর করা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে বড় পাথরের চাকায় পিষে জলপাই পেস্ট তৈরি করা হত, তবে আধুনিক মেশিনের সাহায্যে এটি এখন দ্রুত এবং কার্যকরভাবে করা হয়।
মেশানো (Malaxing): জলপাই পেস্টকে কিছুক্ষণ আস্তে আস্তে মেশানো হয়। এতে তেলগুলো পেস্টের ভেতরে থেকে একত্রিত হয়ে যায়। সাধারণত ২০-৩০ মিনিটের মতো মেশানো হয় যাতে তেল এবং অন্যান্য উপাদান ভালোভাবে মেশে।
আরো পড়ুন: কদবেল খাওয়ার উপকারিতা। কদবেল ভর্তা করার রেসিপি।
তেল আলাদা করা: মেশানোর পরে তেল আলাদা করার জন্য সেন্ট্রিফিউজ মেশিন ব্যবহার করা হয়। এই মেশিনটি তেল, পানি, এবং কঠিন অংশগুলোকে আলাদা করে ফেলে। এটি তেলের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে।
পরিশোধন (Refining): এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা ভার্জিন অলিভ অয়েলের ক্ষেত্রে কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়াকরণ হয় না। তবে রিফাইন্ড বা প্রক্রিয়াজাত অলিভ অয়েল তৈরির জন্য কিছু রাসায়নিক বা তাপের ব্যবহার করা হয়।
সংরক্ষণ ও বোতলজাতকরণ: আলাদা হওয়া তেলকে বড় ট্যাঙ্কে বা কনটেইনারে সংরক্ষণ করা হয়, এবং পরে বোতলজাত করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। তেলকে সূর্যের আলো এবং অক্সিজেন থেকে রক্ষা করার জন্য বায়ুরোধক এবং অন্ধকার বোতলে রাখা হয়।
এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আমরা পাই খাঁটি এবং স্বাস্থ্যকর অলিভ অয়েল, যা রান্না, ত্বকের যত্ন, এবং স্বাস্থ্য সচেতনতায় ব্যবহৃত হয়।
অলিভ অয়েলে কোন পুষ্টিগুন কি পরিমানে থাকে
অলিভ অয়েল একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর তেল, যার মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিশেষত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। নিচে অলিভ অয়েলের প্রধান পুষ্টি উপাদান এবং তাদের পরিমাণ সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া হলো (প্রায় ১ টেবিল চামচ বা ১৫ মি.লি অলিভ অয়েলের ভিত্তিতে)।
- ক্যালরি: ১২০ ক্যালরি
- চর্বি (Fat): ১৪ গ্রাম
- সন্তৃপ্ত চর্বি (Saturated Fat): ২ গ্রাম
- মনোস্যাচুরেটেড চর্বি (Monounsaturated Fat): ১০ গ্রাম
- পলিস্যাচুরেটেড চর্বি (Polyunsaturated Fat): ১.৫ গ্রাম
- ভিটামিন ই (Vitamin E): ১.৯ মিলিগ্রাম (প্রায় ১৩% দৈনিক প্রয়োজনীয়তার)
- ভিটামিন কে (Vitamin K): ৮.১ মাইক্রোগ্রাম (প্রায় ১০% দৈনিক প্রয়োজনীয়তার)
- কোলেস্টেরল: ০ মিলিগ্রাম
- শর্করা (Carbohydrates): ০ গ্রাম
- প্রোটিন (Protein): ০ গ্রাম
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: যেমন পলিফেনলস (Polyphenols), যা দেহের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: অলিভ অয়েলের প্রধান ফ্যাট হল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট (১০ গ্রাম), যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং "খারাপ" LDL কোলেস্টেরল কমায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে পলিফেনলস, প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এগুলি কোষের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
ভিটামিন: ভিটামিন ই ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কোন ধরনের শর্করা ও প্রোটিন নেই।অলিভ অয়েলে কোনো শর্করা বা প্রোটিন নেই, তাই এটি মূলত ফ্যাট থেকে ক্যালরি সরবরাহ করে।
এই পুষ্টিগুণগুলো অলিভ অয়েলকে হৃদরোগ প্রতিরোধ, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের যত্ন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প করে তোলে।
অলিভ অয়েলের উপকারিতা
অলিভ অয়েলের উপকারিতা অসংখ্য রয়েছে, বিশেষ করে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের। এটি স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য এবং দৈনন্দিন জীবনে বহুমুখীভাবে উপকারী। নিচে অলিভ অয়েলের প্রধান কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
হৃদরোগ প্রতিরোধে: অলিভ অয়েলে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদয়ের জন্য উপকারী। এটি খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। অলিভ অয়েলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনলস প্রদাহ হ্রাস করে এবং রক্তনালীকে সুরক্ষিত রাখে, যা হার্টের সুরক্ষায় সহায়ক।
প্রদাহ কমায়: অলিভ অয়েলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, বিশেষত পলিফেনলস, শরীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে, যা হৃদরোগ, বাত, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: গবেষণায় দেখা গেছে যে, অলিভ অয়েল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। এর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট মেটাবলিজম উন্নত করতে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ত্বক এবং চুলের যত্নে উপকারী: অলিভ অয়েলে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্যও কার্যকর। অলিভ অয়েল চুলের গভীরে প্রবেশ করে এবং শুষ্কতা ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে: অলিভ অয়েলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনলস এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কোষের ক্ষতি রোধ করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: অলিভ অয়েল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি: অলিভ অয়েলে থাকা ভিটামিন কে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়তা করে এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমায়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: অলিভ অয়েলে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
হজমে সহায়তা: অলিভ অয়েল পাচনতন্ত্রের জন্য ভালো, এটি অন্ত্রে লুব্রিক্যান্ট হিসেবে কাজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক।
আরো পড়ুন: আমড়ার আচার বানানোর রেসিপি। গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা।
বাত ও গাঁটে ব্যথা কমায়: অলিভ অয়েলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী বাত এবং অন্যান্য গাঁটের ব্যথা হ্রাস করতে সহায়ক। বিশেষ করে, এর মধ্যে থাকা ওলিওক্যানথাল প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: নিয়মিত অলিভ অয়েল সেবন রক্তচাপ কমাতে সহায়ক, বিশেষত উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটি উপকারী।
অ্যান্টি-এজিং উপকারীতা: এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ত্বকের বলিরেখা এবং অন্যান্য বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলিকে হ্রাস করে, ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত রাখতে সহায়তা করে।
এই উপকারিতাগুলো অলিভ অয়েলকে দৈনন্দিন জীবনের একটি অত্যন্ত উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর উপাদান হিসেবে তুলে ধরে।
অলিভ অয়েল কিভাবে ব্যবহার করা হয়
অলিভ অয়েল তার বহুমুখী গুণাবলীর জন্য বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়, যা রান্না থেকে শুরু করে ত্বক ও চুলের যত্নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিচে অলিভ অয়েল ব্যবহারের কিছু সাধারণ এবং বিশেষ পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:
রান্নায় ব্যবহার
- সালাদ ড্রেসিং: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সালাদের উপরে ড্রেসিং হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি সালাদে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগ করে।
- রান্নায় ভাজার জন্য (Sauteing): অলিভ অয়েল কম তাপমাত্রায় ভাজার জন্য উপযুক্ত। বিশেষত, সবজি এবং মাংস সাঁতলাতে এটি ব্যবহার করা হয়।
- বেকিং: অনেক বেকিং রেসিপিতে মাখনের পরিবর্তে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়। এটি খাবারে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যোগ করে।
- পাস্তা বা পিজ্জার উপরে: পাস্তা, পিজ্জা, বা রুটির উপর একটু এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ছিটিয়ে দিলে অতিরিক্ত স্বাদ যোগ হয়।
- ডিপ হিসেবে: রুটি বা ক্র্যাকার খাওয়ার সময় অলিভ অয়েল এবং বালসামিক ভিনেগার মিশিয়ে একটি ডিপ তৈরি করা যায়।
ত্বকের যত্নে ব্যবহার
- ময়েশ্চারাইজার হিসেবে: অলিভ অয়েল একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। স্নানের পর বা রাতে মুখে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করা যায়।
- ত্বক পরিষ্কারে: অলিভ অয়েল দিয়ে মুখে হালকা ম্যাসাজ করে তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা যায়। এটি ত্বকের ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
- ফেস মাস্ক: অলিভ অয়েল, মধু এবং দই মিশিয়ে একটি ফেস মাস্ক তৈরি করা যায় যা ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের প্রদাহ কমাতে: ত্বকের কোন অংশে জ্বালাপোড়া, প্রদাহ বা সূর্যের তাপ থেকে ত্বক পুড়ে গেলে সেখানে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যায়।
চুলের যত্নে ব্যবহার
- চুলের তেল হিসেবে: অলিভ অয়েল চুলের গভীরে পুষ্টি যোগায় এবং চুলকে নরম ও চকচকে করে। এটি চুলের শুষ্কতা কমাতে এবং খুশকি দূর করতে সহায়ক। নিয়মিত চুলের গোড়ায় অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করলে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়।
- হেয়ার মাস্ক: অলিভ অয়েল এবং ডিমের কুসুম মিশিয়ে একটি হেয়ার মাস্ক তৈরি করা যায়, যা চুলের মজবুতি ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- গরম তেল থেরাপি: হালকা গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে এটি গভীরভাবে চুলকে পুষ্টি যোগায় এবং চুল পড়া রোধ করে।
স্বাস্থ্যগত উপকারে ব্যবহার
- রোজকার সেবন: প্রতিদিন এক টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খেলে এটি হার্টের জন্য উপকারী এবং শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: অলিভ অয়েল স্যালাড বা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- গাঁটে ব্যথা কমাতে: অলিভ অয়েল দিয়ে গাঁটে হালকা ম্যাসাজ করলে ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি আর্থ্রাইটিসের জন্যও উপকারী।
কসমেটিক ব্যবহার
- লিপ বাম হিসেবে: শুষ্ক ঠোঁটের জন্য অলিভ অয়েল লিপ বামের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ রাখে।
- মেকআপ রিমুভার: মেকআপ তুলে ফেলার জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বকে নরমতা বজায় রেখে মেকআপ মুছে ফেলে।
- নখের যত্নে: অলিভ অয়েল নখ এবং নখের কিউটিকলকে পুষ্টি যোগায়, যা নখ ভাঙা প্রতিরোধে সহায়ক।
ঘরোয়া ও অন্যান্য ব্যবহার
- দাগ পরিষ্কার করতে: অলিভ অয়েল চামড়ার আসবাবপত্র বা ধাতব পৃষ্ঠের দাগ পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা যায়। এটি পৃষ্ঠকে চকচকে করে এবং ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- কাঠের আসবাবপত্র পালিশ করতে: কাঠের আসবাবপত্রে অলিভ অয়েল দিয়ে পালিশ করা হলে সেটি উজ্জ্বল এবং মসৃণ দেখায়।
- ধাতব পাত্র বা সরঞ্জাম মসৃণ করতে: ধাতব সরঞ্জামে অলিভ অয়েল প্রয়োগ করে পাত্রের জং এবং অন্যান্য দাগ মুছে ফেলা যায়।
এই সমস্ত পদ্ধতিতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যায়। এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পণ্য হিসেবে জনপ্রিয়।
অলিভ অয়েলের অপকারিতা
যদিও অলিভ অয়েল স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারী, তবুও কিছু ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। নির্দিষ্ট অবস্থায় বা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কিছু নেতিবাচক প্রভাবও দেখা যেতে পারে। নিচে অলিভ অয়েলের কিছু অপকারিতা এবং সতর্কতা উল্লেখ করা হলো:
অতিরিক্ত ক্যালরি সঞ্চয়: অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যকর হলেও এটি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত (১ টেবিল চামচে প্রায় ১২০ ক্যালরি)। অতিরিক্ত সেবন করলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি সঞ্চিত হয়, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত অলিভ অয়েল সেবন বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে।
অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের জন্য অলিভ অয়েলে থাকা উপাদানগুলির প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। বিশেষত, ত্বকে ব্যবহার করলে চুলকানি, র্যাশ বা ফোলাভাব হতে পারে। নতুনভাবে ত্বকে ব্যবহার করার আগে এটি হাতে বা কনুইয়ের ভাঁজে পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
হাইপোটেনশন (নিম্ন রক্তচাপ): অলিভ অয়েল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও, যারা ইতিমধ্যে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা ভোগ করছেন, তাদের জন্য এটি সমস্যা বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত অলিভ অয়েল সেবন রক্তচাপ খুব বেশি কমিয়ে দিতে পারে।
আরো পড়ুন: শরীরের ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়।
ত্বকে ছিদ্র আটকে দেওয়া: ত্বকের ওপর অতিরিক্ত অলিভ অয়েল প্রয়োগ করলে কিছু মানুষের জন্য ত্বকের ছিদ্র (পোর) বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা ব্রণ বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী, তাদের ত্বকে অলিভ অয়েল ব্যবহার করার আগে সতর্ক থাকা উচিত।
হজমে সমস্যা: অতিরিক্ত অলিভ অয়েল সেবন করলে ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা হতে পারে। কারণ এটি প্রাকৃতিকভাবে একটি ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে, যা অন্ত্রের কার্যকলাপকে উদ্দীপিত করে। যাদের হজম সমস্যা বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) রয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত অলিভ অয়েল হজমের সমস্যা বাড়াতে পারে।
রান্নায় উচ্চ তাপে ক্ষতিকর হতে পারে: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বেশি তাপমাত্রায় গরম করলে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায় এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনের গুণাগুণ হারায়। খুব বেশি তাপমাত্রায় এই তেল ব্যবহার করলে ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য হালকা বা মাঝারি তাপে রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করা উচিত।
রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক কমাতে পারে: অলিভ অয়েল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক, কিন্তু যদি কেউ ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ করে, তবে অতিরিক্ত অলিভ অয়েল রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক কমিয়ে দিতে পারে। এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার নিম্নমাত্রা) সৃষ্টি করতে পারে।
গ্যালব্লাডার (পিত্তথলি) এবং পিত্তপাথর সমস্যা বাড়াতে পারে: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত অলিভ অয়েল সেবন পিত্তথলিতে বেশি পিত্ত তৈরি করতে উদ্দীপিত করতে পারে, যা পিত্তপাথর তৈরি বা জটিলতা বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি: কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে অলিভ অয়েল অতিরিক্ত সেবন করলে শরীরে অতিরিক্ত ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে, যা অন্ত্রের ব্যালান্স নষ্ট করতে পারে এবং পেটের অস্বস্তি বাড়াতে পারে।
অক্সিডেশন সমস্যার সম্ভাবনা: যদি অলিভ অয়েল সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা হয় বা খোলা অবস্থায় রাখা হয়, তবে এটি অক্সিডাইজড হয়ে যেতে পারে, যা তেলের গুণমান এবং স্বাদ নষ্ট করে। অক্সিডাইজড তেল খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খাচ্ছেন: যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ (যেমন ওয়ারফারিন) খাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল বেশি খেলে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে, কারণ অলিভ অয়েল রক্তের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
এই কারণে, অলিভ অয়েল সঠিক পরিমাণে এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা উচিত। যেকোনো নতুন খাদ্য বা পণ্য ব্যবহার করার আগে তার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা এবং উপযুক্ত সতর্কতা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
এখন আমরা অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব। অলিভ অয়েল ব্যবহারের জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম এবং পদ্ধতি রয়েছে, যা এর উপকারিতা পেতে এবং অপকারিতা এড়াতে সাহায্য করে। নিচে অলিভ অয়েল ব্যবহারের সঠিক নিয়মগুলো তুলে ধরা হলো:
রান্নার জন্য ব্যবহার
- কম তাপে রান্না: অলিভ অয়েলের ফ্ল্যাশ পয়েন্ট (যে তাপমাত্রায় এটি ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করে) অপেক্ষাকৃত কম, বিশেষত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের। তাই এটি কম বা মাঝারি তাপমাত্রায় রান্নায় ব্যবহার করা উচিত।
- সালাদে ও কাঁচা হিসেবে ব্যবহার: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সালাদ, পাস্তা, পিজ্জা বা অন্যান্য খাবারের উপরে কাঁচা অবস্থায় ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, কারণ এতে এর পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে।
- ভাজার জন্য: যদি ভাজার জন্য ব্যবহার করতে চান, তবে সাধারণ অলিভ অয়েল (Refined Olive Oil) বা লাইট অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। এটি উচ্চ তাপে কিছুটা সহনীয়।
- মাখনের বিকল্প হিসেবে: মাখনের বদলে অলিভ অয়েল বেকিং বা টোস্টের উপর লাগানোর জন্য ব্যবহার করা যায়।
ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম
- পরীক্ষা করে নিন: ত্বকে প্রথমবার অলিভ অয়েল ব্যবহারের আগে এটি হাতে বা কনুইয়ের ভাঁজে অল্প পরিমাণে লাগিয়ে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। যদি কোন প্রতিক্রিয়া না হয়, তবে এটি ত্বকে নিরাপদ।
- ময়েশ্চারাইজার হিসেবে: শুষ্ক ত্বকে অলিভ অয়েল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে স্নানের পর বা রাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। অল্প পরিমাণে মুখ, হাত ও শরীরে ব্যবহার করুন।
- ফেসিয়াল মাস্ক: অলিভ অয়েল মধু বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- ত্বকের নির্দিষ্ট স্থানে: সূর্য পুড়ে যাওয়া, শুষ্ক ত্বক, বা প্রদাহিত অংশে সরাসরি অলিভ অয়েল লাগানো যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত তেল ত্বকে জমে না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
চুলের যত্নে ব্যবহারের নিয়ম
- গরম তেল ম্যাসাজ: অলিভ অয়েল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন এবং ৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের শুষ্কতা দূর করতে এবং চুলকে পুষ্টি দিতে সাহায্য করে।
- চুলের মাস্ক: ডিম বা মধুর সাথে মিশিয়ে চুলে হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন। ২০-৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- খুশকির জন্য: মাথার ত্বকে সরাসরি অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করলে খুশকি কমাতে সহায়ক।
খাবারের উপরে কাঁচা ব্যবহার
সালাদ, পাস্তা, পিজ্জা বা রুটির উপর সরাসরি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ছিটিয়ে খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং পুষ্টি যোগ করতে পারেন। রুটির সাথে সরাসরি অলিভ অয়েল ডিপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে চলুন
অলিভ অয়েল উচ্চ ক্যালরি যুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে চলা উচিত। দৈনিক ১-২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল সেবন যথেষ্ট। যাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে যেমন রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা পিত্তাশয়ের সমস্যা, তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অলিভ অয়েল সেবন করা উচিত।
সংরক্ষণ পদ্ধতি: অলিভ অয়েলকে সরাসরি সূর্যের আলো বা বেশি তাপে রাখা উচিত নয়। এটি ঠাণ্ডা ও অন্ধকার স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। খোলার পর বোতলের মুখ সঠিকভাবে বন্ধ রাখতে হবে এবং দীর্ঘদিন খোলা অবস্থায় রেখে না দেওয়া ভালো।
প্রতিদিন সেবনের নিয়ম: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সেবন করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণে থাকে। খাবারের সাথে বা স্যুপে মিশিয়ে অলিভ অয়েল খেলে এটি হার্টের জন্য উপকারী।
এই নিয়মগুলো মেনে অলিভ অয়েল ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপকারিতা সর্বাধিকভাবে পাওয়া সম্ভব, এবং এর অপকারিতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
অলিভ অয়েল কোথায় পাওয়া যায় এবং দাম কত
বাংলাদেশে অলিভ অয়েল সহজেই বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া যায়। এটি সুপারমার্কেট, ফার্মেসি, অনলাইন শপ, এবং স্বাস্থ্য-পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপলব্ধ। কিছু জনপ্রিয় স্থান এবং প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি অলিভ অয়েল পেতে পারেন এবং মূল্য তালিকা:
সুপারমার্কেট: ঢাকার স্বপ্ন, মীনা বাজার, আগোরা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন বড় শপিং সেন্টার। এখানে সাধারণত ২৫০ মি.লি থেকে ৫০০ মি.লি পর্যন্ত বোতল পাওয়া যায়, এবং দাম সাধারণত BDT 600 থেকে BDT 1600 পর্যন্ত হতে পারে, ব্র্যান্ড এবং গুণাগুণ অনুযায়ী।
আরো পড়ুন: ইউরিক এসিড কমানোর হোমিও ঔষধ। ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়।
অনলাইন শপ: Daraz, Evaly, Chaldal, Othoba ইত্যাদি জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অলিভ অয়েল পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, ৫০০ মি.লি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের দাম প্রায় BDT 900 থেকে BDT 1500 হতে পারে।
ফার্মেসি এবং স্বাস্থ্য পণ্য বিক্রয়কেন্দ্র: ঔষধের দোকান, যেমন Lazz Pharma, Apollo Pharmacy ইত্যাদি।এই স্থানে সাধারণত চুল এবং ত্বকের যত্নের জন্য অলিভ অয়েলও পাওয়া যায়, যার দাম সাধারণত BDT 400 থেকে BDT 1000 পর্যন্ত হতে পারে, পণ্যের আকার ও মানের উপর ভিত্তি করে।
বিশেষ স্বাস্থ্য-দোকান ও জিম সেন্টার: স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের জন্য কিছু জিম বা বিশেষ স্বাস্থ্য-পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রে অর্গানিক অলিভ অয়েল পাওয়া যায়, যার দাম প্রায় BDT 800 থেকে BDT 2000 হতে পারে, ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে।
বাজারে প্রচলিত ব্র্যান্ডসমূহ: Borges, Olitalia, EC Organic, Figaro, Filippo Berio ইত্যাদি ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে জনপ্রিয়।
দাম তালিকা:
Borges Extra Virgin Olive Oil (500ml): BDT 900 - BDT 1200
Figaro Olive Oil (500ml): BDT 700 - BDT 1000
EC Organic Olive Oil (500ml): BDT 1200 - BDT 1600
Olitalia Extra Virgin Olive Oil (1L): BDT 1500 - BDT 2000
এই সমস্ত স্থান ও প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী অলিভ অয়েল কিনতে পারবেন।
লেখকের মতামত: অলিভ অয়েলের উপকারিতা
অলিভ অয়েল সম্পর্কে সাধারণত ভালো ধারণায় আমাদের মাঝে প্রচলিত, কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অলিভ অয়েল, বিশেষ করে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী। এটি "মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট" সমৃদ্ধ যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এটি ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান সমৃদ্ধ, যা শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণা বলছে যে অলিভ অয়েল নিয়মিত সেবন করলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি কমে যেতে পারে।
তাছাড়া এটি ত্বকের যত্নে ও চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি এটি রান্নায় ও ভাজা পোড়ায়ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে, কিছু দিক বিবেচনা করলে এর কিছু নেতিবাচক পরিলক্ষিত করা যায়। যেমন: উচ্চ ক্যালোরি হওয়ায় ওজন বৃদ্ধি, কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার সমস্যা, অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
ডেইলীবিডিটেক নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url