আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪। আজ আরবি মাসের কত তারিখ
Belal
১৩ জুল, ২০২৪
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? ইসলামিক হিজরি ক্যালেন্ডার বা আরবি ক্যালেন্ডার হল একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার যা
ইসলামী বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং ঘটনাগুলি চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়। আমাদের আজকের
আর্টিকেল হিজরি মাস সম্পর্কে।
হিজরি ক্যালেন্ডারটি নবী মুহাম্মদ (সা.) এর মদিনায় হিজরতের সময় থেকে শুরু
হয়েছিল। হিজরি ১৪৪৬ সালের ইসলামিক ক্যালেন্ডারের মাসগুলির নাম ও তাদের গুরুত্ব
নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের প্রথম মাস হলো মুহররম মাস। মুহররম হল ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস এবং এটি ইসলামের চারটি পবিত্র মাসের
মধ্যে একটি। মুহররমের ১০ম দিন, আশুরা, মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই
দিনে নবী মুসা (আ.) ও তার অনুসারীরা ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
শিয়া মুসলমানদের জন্য, আশুরা হল কারবালার যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (রা.) এর শাহাদতের
দিন।
মুহররম মাসের ফজিলত: মুহররম মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস এবং এটি মুসলমানদের জন্য একটি
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। মুহররম শব্দটি আরবি ভাষায় "পবিত্র" বা "নিষিদ্ধ"
অর্থে ব্যবহৃত হয়। এই মাসের বিশেষ ফজিলত এবং তাৎপর্য রয়েছে, যা নিম্নে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
মুহররম মাসের পবিত্রতা:মুহররম মাস চারটি পবিত্র মাসের (আল-অশহুরুল-হুরুম) মধ্যে একটি, যা কুরআনে
উল্লেখ করা হয়েছে:“নিশ্চয়ই, আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, আল্লাহর কিতাবে (কুরআনে) যেদিন
তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত।”(সূরা
আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)
এই চারটি মাসের মধ্যে মুহররম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আশুরার দিন মুহররম মাসের ১০ম দিনটি আশুরা নামে পরিচিত। আশুরার দিন
ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি বিভিন্ন কারণে মুসলমানদের জন্য
বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ।
নবী মুসা (আ.) এর মুক্তি: আশুরার দিনে নবী মুসা (আ.) এবং তার অনুসারীরা
ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের সমুদ্রের মাধ্যমে
নিরাপদে পার করেছিলেন এবং ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনীকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
ইমাম হুসাইন (রা.) এর শাহাদাত: শিয়া মুসলমানদের জন্য, আশুরার দিনটি আরও
বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে কারবালার যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার পরিবারকে
নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনার মাধ্যমে ইমাম হুসাইন (রা.) ইসলামের জন্য
আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
রোজা রাখার ফজিলতঃ আশুরার দিন রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। নবী মুহাম্মদ
(সা.) বলেন: "আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি যে, তিনি এর
মাধ্যমে পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহ মাফ করে দিবেন।"(মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)।
এছাড়াও, মুহররম মাসের ৯ম ও ১০ম দিন বা ১০ম ও ১১তম দিন রোজা রাখার সুন্নত রয়েছে,
যাতে এটি ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের থেকে ভিন্ন হয়।
নফল ইবাদত ও দান: মুহররম মাসে নফল ইবাদত,
নামাজ, দান-খয়রাত এবং আল্লাহর স্মরণ বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই মাসে করা
ইবাদত এবং নফল আমলগুলোর প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষভাবে বাড়িয়ে দেওয়া
হয়।
পাপ ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা: মুহররম মাসে, বিশেষত পবিত্র মাস
হওয়ায়, মুসলমানদের উচিত সমস্ত প্রকারের পাপ ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা। এটি
একটি সুযোগ আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য।
মুহররম মাসের বিশেষ দোয়া: মুহররম মাসে বিশেষ
দোয়া এবং তাওবা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার এবং
নতুন বছরের জন্য হেদায়েত ও বরকত কামনার একটি উপায়।
মুহররম মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
সফর মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের দ্বিতীয় মাস হলো সফর মাস। সফর হল ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস। সফর শব্দের অর্থ হল "খালি"। এই মাসে
আরবরা যুদ্ধ করতে যেত এবং তাদের ঘর-বাড়ি খালি থাকত। যদিও অনেকেই এই মাসকে অশুভ
মনে করেন, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অশুভ কিছু নয়।
সফর মাসের ফজিলত: সফর মাস হিজরি (ইসলামিক) ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস এবং
এটি সম্পর্কে অনেক কুসংস্কার এবং ভুল ধারণা রয়েছে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সফর
মাসের ফজিলত এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কুসংস্কার ও ভুল ধারণা: ইসলামের প্রাথমিক যুগে এবং বর্তমানেও কিছু মানুষ
সফর মাসকে অশুভ বা অমঙ্গলময় মনে করে থাকেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, এই মাসে অশুভ
ঘটনাগুলি বেশি ঘটে। এই ধরনের বিশ্বাস এবং ধারণাগুলি সম্পূর্ণ ভুল এবং ইসলামের
শিক্ষা ও নবী মুহাম্মদ (সা.) এর হাদিসের বিপরীত। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন: "সফর
মাসে কোনো অমঙ্গল নেই।" (সহিহ মুসলিম: ২২২০)
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সফর মাস:
১. কোন বিশেষ ইবাদত বা আমল নেই: সফর মাসের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো
বিশেষ ইবাদত, রোজা বা নামাজ নেই যা আল্লাহর রাসুল (সা.) দ্বারা সুপারিশ করা
হয়েছে। তবে, সাধারণ নফল ইবাদত, দান-খয়রাত এবং আল্লাহর স্মরণ করা উচিত, যেভাবে
বছরের অন্যান্য মাসে করা হয়।
২. কুসংস্কার ও বিদআত থেকে দূরে থাকা: মুসলমানদের উচিত সফর মাস সম্পর্কে
প্রচলিত কুসংস্কার ও বিদআত থেকে দূরে থাকা। ইসলামের সঠিক শিক্ষা অনুযায়ী,
আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখা এবং যে কোনো ধরনের অশুভ ধারণা বা কাজ থেকে
বিরত থাকা।
বাস্তব জীবন ও আমল: সফর মাসে কোনো বিশেষ আমল বা ইবাদতের নির্দেশনা না
থাকলেও, মুসলমানদের উচিত এই সময়ে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে সাধারণ ইবাদত ও
আমল চালিয়ে যাওয়া। কিছু সাধারণ আমল হতে পারে:
সাধারণ নফল নামাজ বেশি বেশি আদায় করা।
বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অর্থ নিয়ে ভাবা।
আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।
গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং দান-খয়রাত করা।
শিক্ষনীয় বিষয়: সফর মাস সম্পর্কে ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি জানলে
মুসলমানরা কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকতে পারে। নবী মুহাম্মদ (সা.) এর শিক্ষা
অনুযায়ী, আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা রেখে জীবনযাপন করতে হবে। কোনো মাস
বা সময়কালকে অশুভ বা অমঙ্গলময় মনে করা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সফর মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
রবিউল আওয়াল মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের তৃতীয় মাস হলো রবিউল আওয়াল মাস। রবিউল আওয়াল হল তৃতীয় মাস এবং এটি মুসলমানদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই
মাসে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১২ রবিউল আওয়াল তার জন্মদিন
হিসেবে পালিত হয় এবং এটি মাওলিদ আল-নবী নামে পরিচিত।
রবিউল আওয়াল মাসের ফজিলত: রবিউল আওয়াল মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের তৃতীয়
মাস এবং এটি ইসলামের ইতিহাসে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসটি মুসলমানদের জন্য
অনেক তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু মাস। এই
মাসের ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মহানবী (সা.) এর জন্ম: রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে মহানবী হযরত মুহাম্মদ
(সা.) মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। এই দিনটি মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে
মাওলিদুন্নবী বা ঈদে মিলাদুন্নবী নামে উদযাপিত হয়। মহানবীর জন্মদিন উপলক্ষে
মুসলমানরা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, কুরআন তিলাওয়াত এবং দরুদ পাঠ
করে থাকেন।
মহানবী (সা.) এর মৃত্যু: মহানবী মুহাম্মদ (সা.) একই মাসে, রবিউল আওয়াল
মাসের ১২ তারিখে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত শোকাবহ
এবং তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলমানরা মহানবীর স্মৃতিচারণ করে এবং তার শিক্ষাকে অনুসরণ
করার অঙ্গীকার করেন।
রবিউল আওয়াল মাসের করনীয় আমল:
১. নবীর প্রতি ভালোবাসা ও দরুদ পাঠ: এই মাসে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি
ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য বেশি করে দরুদ পাঠ করা উচিত। দরুদ শরীফ পাঠ
করলে আল্লাহ তাআলা বিশেষ পুরস্কার দেন এবং পাপ মোচন করেন। হাদিসে আছে: “যে
ব্যক্তি একবার আমার উপর দরুদ পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ
করবেন।” (মুসলিম)
২. নবীর জীবন ও শিক্ষা অনুধাবন: মহানবীর (সা.) জীবন এবং শিক্ষা সম্পর্কে
জ্ঞানার্জন করা এবং তা জীবনে প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে তার
জীবনী, হাদিস এবং সুন্নাহ পড়া ও অনুশীলন করা উচিত।
৩. দরিদ্র ও দুঃস্থদের সাহায্য: রবিউল আওয়াল মাসে দান-খয়রাত এবং সমাজের
দরিদ্র ও দুঃস্থদের সাহায্য করা মহানবীর (সা.) শিক্ষা অনুযায়ী অত্যন্ত
ফজিলতপূর্ণ। ইসলামের মূল শিক্ষা হল মানবতার সেবা, যা মহানবী (সা.) তার জীবনের
মাধ্যমে প্রদর্শন করেছেন।
উদযাপনের পদ্ধতি
মিলাদ মাহফিল: ঘরোয়া বা মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা, যেখানে কুরআন
তিলাওয়াত, নবীর জীবনী নিয়ে আলোচনা, নাশিদ বা ইসলামিক গান পরিবেশন করা হয়।
সদকা ও দান-খয়রাত: গরীব, এতিম ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, অর্থ
সাহায্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা।
ইসলামিক শিক্ষা: মহানবী (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা, কুইজ
প্রতিযোগিতা এবং শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা।
রবিউল আওয়াল মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
রবিউস সানি মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের চতুর্থ মাস হলো রবিউস সানি মাস। রবিউল সানি হল চতুর্থ মাস। এই মাসের বিশেষ কোনো ঘটনা নেই, তবে এটি একটি
শান্তিপূর্ণ মাস হিসেবে পরিচিত।
রবিউস সানি মাসের ফজিলত: রবিউস সানি মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের চতুর্থ মাস
এবং এটি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। যদিও এই মাস সম্পর্কে বিশেষ কোনো
হাদিস বা ধর্মীয় কার্যক্রম নেই, তবুও এর নিজস্ব কিছু ফজিলত এবং গুরুত্ব রয়েছে।
ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষা অনুসারে, বছরের প্রতিটি মাস এবং দিনই আল্লাহর দান এবং
প্রতিটি সময়েরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। রবিউস সানি মাসও তার ব্যতিক্রম নয়। এই
মাসের ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রবিউস সানি
১. রবিউস সানি মাসে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং ইবাদত বাড়ানোর বিশেষ সুযোগ
রয়েছে। এই মাসে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও ইসতেগফার করা উচিত। আল্লাহর
কাছ থেকে রহমত ও বরকত পাওয়ার জন্য এই মাসে বেশি করে ইবাদত করা যেতে পারে।
২. রবিউস সানি মাসে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে আরও বেশি জানার
এবং তার সুন্নাহ অনুসরণের সুযোগ রয়েছে। এই মাসে মহানবীর (সা.) হাদিস পড়া এবং
তার জীবনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
৩. ইসলামের অন্যতম প্রধান শিক্ষা হল দরিদ্র ও দুঃস্থদের সাহায্য করা। রবিউস সানি
মাসে দান-খয়রাত ও সমাজসেবা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এই মাসে গরীব, এতিম ও
মিসকিনদের সাহায্য করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যেতে পারে।
রবিউস সানি মাসের আমল
রবিউস সানি মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা যেতে পারে, যেমন:
নফল নামাজ: প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
কুরআন তিলাওয়াত: বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অর্থ নিয়ে ভাবা।
দোয়া ও ইসতেগফার: বেশি বেশি দোয়া করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করা।
দান-খয়রাত: গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং দান-খয়রাত করা।
রোজা রাখা: ইচ্ছা করলে নফল রোজা রাখা যেতে পারে।
রবিউস সানি মাসের বিশেষ দোয়া: রবিউস সানি মাসে বিশেষ দোয়া এবং
ইসতেগফার করা উচিত। এটি আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার এবং জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে তার সাহায্য প্রার্থনা করার একটি সুযোগ।
রবিউস সানি মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
জমাদিউল আউয়াল মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আওয়াল মাস। জমাদিউল আউয়াল হল পঞ্চম মাস। এই মাসের কোনো উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান নেই,
তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস হিসেবে বিবেচিত হয়।
জমাদিউল আউয়াল মাসের ফজিলত: জমাদিউল আউয়াল মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের পঞ্চম মাস
এবং এটি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। যদিও এই মাস সম্পর্কে বিশেষ কোনো
হাদিস বা ধর্মীয় কার্যক্রম নেই, তবুও এর নিজস্ব কিছু ফজিলত এবং গুরুত্ব
রয়েছে।
ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষা অনুসারে, বছরের প্রতিটি মাস এবং দিনই আল্লাহর দান এবং
প্রতিটি সময়েরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। জমাদিউল আউয়াল মাসও তার ব্যতিক্রম নয়।
এই মাসের ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জমাদিউল আউয়াল
১. আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ইবাদত: জমাদিউল আউয়াল মাসে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য
এবং ইবাদত বাড়ানোর বিশেষ সুযোগ রয়েছে। এই মাসে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত,
দোয়া ও ইসতেগফার করা উচিত। আল্লাহর কাছ থেকে রহমত ও বরকত পাওয়ার জন্য এই মাসে
বেশি করে ইবাদত করা যেতে পারে।
২. নবী কারীম (সা.) এর শিক্ষা ও সুন্নাহ অনুসরণ: জমাদিউল আউয়াল মাসে নবী
মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে আরও বেশি জানার এবং তার সুন্নাহ
অনুসরণের সুযোগ রয়েছে। এই মাসে মহানবীর (সা.) হাদিস পড়া এবং তার জীবনের ঘটনা
নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
৩. দান-খয়রাত ও সমাজসেবা: ইসলামের অন্যতম প্রধান শিক্ষা হল দরিদ্র ও দুঃস্থদের
সাহায্য করা। জমাদিউল আউয়াল মাসে দান-খয়রাত ও সমাজসেবা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
এই মাসে গরীব, এতিম ও মিসকিনদের সাহায্য করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যেতে
পারে।
জমাদিউল আউয়াল মাসের আমল
জমাদিউল আউয়াল মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা যেতে পারে, যেমন:
নফল নামাজ: প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
কুরআন তিলাওয়াত: বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অর্থ নিয়ে ভাবা।
দোয়া ও ইসতেগফার: বেশি বেশি দোয়া করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করা।
দান-খয়রাত: গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং দান-খয়রাত করা।
রোজা রাখা: ইচ্ছা করলে নফল রোজা রাখা যেতে পারে।
জমাদিউল আউয়াল মাসের বিশেষ দোয়া: জমাদিউল আউয়াল মাসে বিশেষ দোয়া
এবং ইসতেগফার করা উচিত। এটি আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার এবং জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে তার সাহায্য প্রার্থনা করার একটি সুযোগ।
জমাদিউল আওয়াল মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
জমাদিউস সানি মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের ষষ্ঠ মাস হলো জমাদিউস সানি মাস। জমাদিউস সানি হল ষষ্ঠ মাস। এই মাসের উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা না থাকলেও, এটি ইসলামী
ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস।
জমাদিউস সানি মাসের ফজিলত: জমাদিউস সানি (জমাদিউল আখির) মাস হিজরি
ক্যালেন্ডারের ষষ্ঠ মাস এবং এটি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। যদিও এই
মাস সম্পর্কে বিশেষ কোনো হাদিস বা ধর্মীয় কার্যক্রম নেই, তবুও এর নিজস্ব কিছু
ফজিলত এবং গুরুত্ব রয়েছে। ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষা অনুসারে, বছরের প্রতিটি মাস
এবং দিনই আল্লাহর দান এবং প্রতিটি সময়েরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। জমাদিউস সানি
মাসও তার ব্যতিক্রম নয়। এই মাসের ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করা হলো।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জমাদিউস সানি
১. আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ইবাদত: জমাদিউস সানি মাসে আল্লাহর প্রতি
আনুগত্য এবং ইবাদত বাড়ানোর বিশেষ সুযোগ রয়েছে। এই মাসে নফল নামাজ, কুরআন
তিলাওয়াত, দোয়া ও ইসতেগফার করা উচিত। আল্লাহর কাছ থেকে রহমত ও বরকত পাওয়ার
জন্য এই মাসে বেশি করে ইবাদত করা যেতে পারে।
২. নবী কারীম (সা.) এর শিক্ষা ও সুন্নাহ অনুসরণ: জমাদিউস সানি মাসে নবী
মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে আরও বেশি জানার এবং তার সুন্নাহ
অনুসরণের সুযোগ রয়েছে। এই মাসে মহানবীর (সা.) হাদিস পড়া এবং তার জীবনের ঘটনা
নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
৩. দান-খয়রাত ও সমাজসেবা: ইসলামের অন্যতম প্রধান শিক্ষা হল দরিদ্র ও
দুঃস্থদের সাহায্য করা। জমাদিউস সানি মাসে দান-খয়রাত ও সমাজসেবা করা অত্যন্ত
ফজিলতপূর্ণ। এই মাসে গরীব, এতিম ও মিসকিনদের সাহায্য করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন
করা যেতে পারে।
জমাদিউস সানি মাসের আমল
জমাদিউস সানি মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা যেতে পারে, যেমন:
নফল নামাজ: প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
কুরআন তিলাওয়াত: বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অর্থ নিয়ে ভাবা।
দোয়া ও ইসতেগফার: বেশি বেশি দোয়া করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করা।
দান-খয়রাত: গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং দান-খয়রাত করা।
রোজা রাখা: ইচ্ছা করলে নফল রোজা রাখা যেতে পারে।
জমাদিউস সানি মাসের বিশেষ দোয়া: জমাদিউস সানি মাসে বিশেষ দোয়া এবং
ইসতেগফার করা উচিত। এটি আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার এবং জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে তার সাহায্য প্রার্থনা করার একটি সুযোগ।
জমাদিউস সানি মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
রজব মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের সপ্তম মাস হলো রজব মাস। রজব হল ইসলামিক ক্যালেন্ডারের সপ্তম মাস এবং এটি চারটি পবিত্র মাসের মধ্যে একটি।
এই মাসে ইসরা ও মিরাজের রাত রয়েছে, যা নবী মুহাম্মদ (সা.) এর মিরাজ বা আকাশে
ভ্রমণের দিন।
রজব মাসের ফজিলত: রজব মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের সপ্তম মাস এবং এটি ইসলামের চারটি
পবিত্র মাসের (আল-অশহুরুল-হুরুম) মধ্যে একটি। রজব মাসের ফজিলত এবং তাৎপর্য
মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে বিভিন্ন ইবাদত ও আমলের বিশেষ
ফজিলত রয়েছে যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং কুরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে।
রজব মাসের পবিত্রতা: রজব মাস সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন: “নিশ্চয়ই,
আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, আল্লাহর কিতাবে (কুরআনে) যেদিন তিনি আসমান ও
জমিন সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত।”(সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)
এই চারটি পবিত্র মাসের মধ্যে রজব অন্যতম। এই মাসকে 'আল-আসাম' বা 'বধির' মাসও বলা
হয়, কারণ এই মাসে যুদ্ধ ও সংঘর্ষ নিষিদ্ধ ছিল।
রজব মাসের বিশেষ ইবাদত: রজব মাসে বিশেষ ইবাদত ও আমল করার ফজিলত রয়েছে।
নিম্নে রজব মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও আমল উল্লেখ করা হলো:
১. নফল রোজা রাখা: রজব মাসে নফল রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে
আছে, নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন: “রজব মাস মহান আল্লাহর মাস, শাবান মাস আমার মাস
এবং রমজান মাস আমার উম্মতের মাস।” (বায়হাকি) এই মাসে নফল রোজা রাখলে আল্লাহ তাআলা
বিশেষ পুরস্কার দেন।
২. ইসরা ও মিরাজের রাত: রজব মাসের ২৭ তারিখে ইসরা ও মিরাজের ঘটনা ঘটে। এই
রাতে নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছান এবং উম্মতের জন্য নামাজের
উপহার নিয়ে আসেন। এই রাতটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ
ইবাদত করার ফজিলত রয়েছে।
৩. ইস্তিগফার ও দোয়া: রজব মাসে বেশি করে ইস্তিগফার ও দোয়া করা উচিত।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তার কাছে বিশেষ দোয়া করা এই মাসের বিশেষ
আমল।
৪. দান-খয়রাত ও সমাজসেবা: রজব মাসে দান-খয়রাত করা এবং সমাজের দরিদ্র ও
দুঃস্থদের সাহায্য করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এই মাসে করা দান-খয়রাতের প্রতিদান
আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে বাড়িয়ে দেন।
রজব মাসের বিশেষ দোয়া: রজব মাসে একটি বিশেষ দোয়া পড়ার সুন্নত রয়েছে:
“আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।” অর্থ: “হে
আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস
পর্যন্ত পৌঁছে দিন।”
রজব মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
শাবান মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের অষ্টম মাস হলো শাবান মাস। শাবান হল অষ্টম মাস। শাবানের ১৫তম রাত, শবে বরাত, মুসলমানদের কাছে একটি
গুরুত্বপূর্ণ রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করে এবং বিশেষ প্রার্থনা করে।
শাবান মাসের ফজিলত: শাবান মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের অষ্টম মাস এবং এটি
মুসলমানদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। রমজান মাসের প্রস্তুতি হিসেবে
শাবান মাসকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) এই মাসে বিশেষভাবে
ইবাদত ও আমল করতেন। শাবান মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হলো।
শাবান মাসের বিশেষ ফজিলত
১. নবী মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় মাস: নবী মুহাম্মদ (সা.) শাবান মাসকে
খুবই পছন্দ করতেন এবং এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করতেন। হাদিসে উল্লেখ আছে, নবী
মুহাম্মদ (সা.) বলেন: "শাবান আমার মাস, আর রমজান আল্লাহর মাস।" (আল-মুজাম
আল-কবির)
২. নফল রোজা রাখা: শাবান মাসে নফল রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদিসে
আছে, আয়েশা (রা.) বলেন: "নবী (সা.) কে আমি শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা রাখতে
দেখিনি। তিনি প্রায় পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন।" (সহিহ মুসলিম)
৩. শবে বরাত: শাবান মাসের ১৫তম রাতকে শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত বলা হয়।
এই রাতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের প্রতি বিশেষ রহমত নাজিল করেন এবং গুনাহ মাফ
করেন। এই রাতে বিশেষ দোয়া, নামাজ ও ইবাদত করার ফজিলত রয়েছে।
শাবান মাসের আমল: শাবান মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা যেতে পারে, যেমন:
নফল রোজা রাখা: এই মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা উচিত।
ইস্তিগফার ও দোয়া: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তার কাছে দোয়া
করা।
কুরআন তিলাওয়াত: বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অর্থ নিয়ে ভাবা।
দান-খয়রাত: গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং দান-খয়রাত করা।
শবে বরাতের ইবাদত: শবে বরাতের রাতে নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা এবং
দোয়া করা।
শাবান মাসের বিশেষ দোয়া: শাবান মাসে একটি বিশেষ দোয়া পড়ার সুন্নত
রয়েছে: “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।”
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান
মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।”
সাবান মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
রমজান মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের নবম মাস হলো রমজান মাস। রমজান হল ইসলামিক ক্যালেন্ডারের নবম মাস এবং এটি মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র
মাস। এই মাসে কুরআন শরীফ অবতীর্ণ হয়েছিল এবং মুসলমানরা সারাদিন রোজা রাখে, রাতে
তারাবি নামাজ পড়ে।
রমজান মাসের ফজিলত: রমজান মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের নবম মাস এবং এটি
মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে আল্লাহ তাআলা
কুরআন অবতীর্ণ করেছেন এবং এই মাসে রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। রমজান
মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
রমজান মাসের পবিত্রতা: রমজান মাস সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন: "রমজান মাস,
যাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে মানবজাতির জন্য পথনির্দেশিকা এবং সুস্পষ্ট দিশা ও
সত্যাসত্যের পার্থক্য নিরূপক হিসেবে।" (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫)
রোজা রাখার ফজিলত: রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ এবং এটি ইসলামের পাঁচটি
স্তম্ভের একটি। রোজার মাধ্যমে মুসলমানরা আত্মশুদ্ধি লাভ করে এবং আল্লাহর কাছে
নিজের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। হাদিসে আছে, নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন: "যে
ব্যক্তি ঈমান সহকারে ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত
গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।" (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত: রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত
রয়েছে। এই মাসে মুসলমানরা কুরআন তিলাওয়াত করে এবং এর অর্থ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা
করে। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা যায়।
তারাবিহ নামাজের ফজিলত: রমজান মাসে তারাবিহ নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত
রয়েছে। তারাবিহ নামাজ রমজানের রাতগুলিতে আদায় করা হয় এবং এটি সুন্নত
মুআক্কাদা। তারাবিহ নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা কুরআনের তিলাওয়াত শোনার সুযোগ
পায় এবং আল্লাহর কাছে নৈকট্য অর্জন করে।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত: রমজান মাসের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ রাত হল
লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। কুরআনে বলা হয়েছে: "নিশ্চয়ই, আমি
কদরের রাতে কুরআন অবতীর্ণ করেছি। আপনি কি জানেন কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার
মাসের চেয়েও উত্তম।" (সূরা আল-কদর, আয়াত: ১-৩)
ইফতার ও সেহরির ফজিলত: রমজান মাসে ইফতার ও সেহরি গ্রহণের বিশেষ ফজিলত
রয়েছে। ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয় এবং সেহরি গ্রহণের মাধ্যমে মুসলমানরা
আল্লাহর বিশেষ রহমত লাভ করে। হাদিসে আছে, নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন: "সেহরির
খাবারে বরকত রয়েছে, তাই তোমরা সেহরি গ্রহণ কর।" (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
জাকাত ও দান-খয়রাত: রমজান মাসে জাকাত ও দান-খয়রাত করার বিশেষ ফজিলত
রয়েছে। এই মাসে গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এবং তাদের মধ্যে খাদ্য ও বস্ত্র
বিতরণ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
দোয়া ও ইস্তেগফার: রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করা এবং আল্লাহর
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। এই মাসে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের প্রতি বিশেষ
রহমত নাজিল করেন এবং তাদের গুনাহ মাফ করেন।
রমাজান মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
শাওয়াল মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের দশম মাস হলো শাওয়াল মাস। শাওয়াল হল দশম মাস। এই মাসের প্রথম দিন ঈদুল ফিতর হিসেবে পালিত হয়, যা রমজানের
শেষে আসে। এটি একটি উৎসবমুখর দিন এবং মুসলমানরা এই দিনে বিশেষ প্রার্থনা এবং খুশি
উদযাপন করে।
শাওয়াল মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দশম মাস এবং এটি মুসলিমদের জন্য বিশেষ
গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের বিশেষ ফজিলত, করনীয় আমল ও ১৪৪৬ হিজরি ক্যালেন্ডার নিয়ে
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
শাওয়াল মাসের ফজিলত
১. ঈদুল ফিতর উদযাপন: শাওয়াল মাসের প্রথম দিনেই ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
এটি রমজানের পর মুসলিমদের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন। সারা মাস রোজা রাখার পর এই
দিনটি উদযাপন করা হয়। ঈদুল ফিতর মূলত সিয়াম সাধনার পর খুশির প্রতীক হিসেবে
আসে।
২. ছয় রোজার গুরুত্ব: শাওয়াল মাসের মধ্যে ছয়টি রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত
রয়েছে। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে এবং এরপর শাওয়াল মাসে
ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন সারা বছর রোজা রাখলো" (মুসলিম শরীফ)। এটি সারা বছরের
রোজার সমতুল্য পুরস্কারের নির্দেশ করে।
৩. সওয়াবের বৃদ্ধি: শাওয়াল মাসে বেশি ইবাদত করা এবং নফল রোজা রাখা
আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে বেশি সওয়াব লাভ করার সুযোগ দেয়। এই মাসে ইবাদত করা
মানে রমজানের রোজার পরবর্তী প্রভাব বজায় রাখা এবং নেকি বৃদ্ধির একটি সুযোগ।
৪. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো: ঈদুল ফিতরের সময় পরিবারের সঙ্গে সময়
কাটানো এবং একে অপরের সঙ্গে খুশি ভাগাভাগি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই
মাসটি পরিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার একটি আদর্শ সময়।
করনীয় আমল
১. ছয়টি রোজা রাখা: শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
এটি রমজানের রোজার সাথে মিলিয়ে সারা বছরের রোজার সমান সওয়াব প্রদান করে।
২. বেশি বেশি ইবাদত করা: এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। বিশেষ করে,
নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত এবং দোয়া করা।
৩. পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো: ঈদুল ফিতরের পর পরিবার এবং
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং তাদের সঙ্গে খুশি ভাগাভাগি করা উচিত।
৪. সদকা ও দান করা: শাওয়াল মাসে বেশি বেশি সদকা ও দান করা অত্যন্ত
পুণ্যের কাজ। গরীব ও দুঃস্থদের সাহায্য করা এ মাসে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ।
শাওয়াল মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
জিলক্বদ মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের একাদশ মাস হলো জিলক্বদ মাস। জিলক্বদ মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের একাদশতম মাস এবং এটি বিশেষ ফজিলত ও করণীয়
আমল সহকারে মুসলিমদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে হজযাত্রীরা তাদের হজের
প্রস্তুতি শুরু করে। নিচে এই মাসের ফজিলত, করনীয় আমল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা
হলো:
জিলক্বদ মাসের ফজিলত
১. হারাম মাসগুলির মধ্যে একটি: জিলক্বদ মাস চারটি হারাম মাসের
একটি। এই মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ এবং এটি পবিত্র মাস হিসেবে গণ্য হয়। আল্লাহ
তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট গণনায় মাস বারোটি, আল্লাহ আসমান ও জমিন
সৃজনের দিন থেকে; তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত মাস।” (সুরা তওবা, আয়াত: ৩৬)
২. হজের প্রস্তুতির মাস: জিলক্বদ মাস হজের মৌসুমের একটি গুরুত্বপূর্ণ
অংশ। এই মাসে হাজী হতে ইচ্ছুক মুসলিমরা হজের প্রস্তুতি নেয়। এটি আত্মশুদ্ধি
এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের একটি সময়।
৩. শান্তি ও নিরাপত্তার মাস: এই মাসে মুসলিমরা যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে বিরত
থাকে এবং সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখে। এটি ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
করনীয় আমল
১. বেশি বেশি ইবাদত করা: এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। বিশেষ করে,
নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত এবং দোয়া করা।
২. নফল রোজা রাখা: যদিও জিলক্বদ মাসে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, তবুও
নফল রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।
৩. তাওবা ও ইস্তেগফার: এই মাসে বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তেগফার করা উচিত।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং পাপমুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
৪. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো: পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো এবং একে
অপরের সঙ্গে খুশি ভাগাভাগি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই মাসটি পরিবারিক
বন্ধন দৃঢ় করার একটি আদর্শ সময়।
জিলক্বদ মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
জিলহজ মাসের ফজিলত, করনীয় আমল ও ক্যালেন্ডার
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪ এর আরবি মাসের বারতম মাস হলো জিলহজ্জ মাস। জিলহজ্জ মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ এবং সর্বশেষ মাস। এটি মুসলিমদের জন্য
বিশেষ গুরুত্ব বহন করে কারণ এই মাসেই হজ পালন করা হয় এবং ঈদুল আযহা উদযাপন করা
হয়। জিলহজের ১০ম দিনে ঈদুল আযহা পালিত হয়, যা কুরবানি বা পশু উৎসর্গের দিন।
এই মাসের বিশেষ ফজিলত, করনীয় আমল নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
জিলহজ্জ মাসের ফজিলত
১. হজের মাস: জিলহজ্জ মাস হজের মাস। প্রতিটি মুসলিমের জন্য হজ একটি
গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং এটি ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। যারা হজ পালন করেন, তারা
আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তাদের পাপ মোচনের সুযোগ পান।
২. দশ দিনের ফজিলত: জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশক অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে
এসেছে, "আল্লাহর নিকট এমন কোনো দিনসমূহ নেই, যেগুলোতে সৎকর্ম করা এই দিনগুলোর
চেয়ে অধিক প্রিয়।" সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর
রাস্তায় জিহাদ করাও কি (এই দিনের সৎকর্ম অপেক্ষা প্রিয় নয়)? তিনি বললেন, না,
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাও নয়। তবে সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি নিজের জান ও মাল
নিয়ে জিহাদ করল এবং এর কিছুই ফিরে আসল না।" (বুখারি শরীফ)
৩. আরাফার দিন: জিলহজ্জের ৯ম দিনকে আরাফার দিন বলা হয়। এই দিনটি হজের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। হাদিসে এসেছে, "আরাফার দিনের রোজা বিগত বছরের ও
আগামী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারা স্বরূপ।" (মুসলিম শরীফ)
4. ঈদুল আযহা: জিলহজ্জ মাসের ১০ম দিনে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। এটি
মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদ। কুরবানি দেওয়ার মাধ্যমে মুসলিমরা এই দিনটি
উদযাপন করেন।
করনীয় আমল:
১. প্রথম দশকের রোজা রাখা: জিলহজ্জের প্রথম দশকে রোজা রাখা অত্যন্ত
ফজিলতপূর্ণ। বিশেষ করে, ৯ জিলহজ্জ (আরাফার দিন) রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।
২. তাওবা ও ইস্তেগফার করা: এই মাসে বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তেগফার করা
উচিত। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং পাপমুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
৩. কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়া করা: জিলহজ্জ মাসে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত ও
দোয়া করা উচিত। এটি আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের একটি সময়।
৪. কুরবানি করা: জিলহজ্জ মাসের ১০ম দিনে ঈদুল আযহা উদযাপনের সময় পশু
কুরবানি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। এটি ইব্রাহিম (আ.) এর সুন্নাত এবং
আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের একটি প্রতীক।
জিলহজ্ব মাসের মাসের ক্যালেন্ডারের ছবি:
লেখকের মতামত
হিজরী মাস মুসলিম জীবনের একটি অংশ যা তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম ও ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হিজরী ক্যালেন্ডার না থাকলে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় উৎসব ও কার্যক্রম সঠিকভাবে পালন করতে পারত না। তাই মুসলিমদের ধর্মীয় কার্যকলাপ, ইবাদত বন্দেগী করার জন্য হিজরি ক্যালেন্ডার গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।
আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।
ডেইলীবিডিটেক নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url