সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা মধুর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান।

সকালে-খালি-পেটে-মধু

সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। বর্তমানে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তারা বর্তমানে চিনির পরিবর্তে মধু খাওয়াকে বেশি প্রাধাণ্য দিচ্ছে। আজকে আমরা জানবো মধুর সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

পোস্ট সূচীপত্র

মধু কি

মধু এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ যা মৌমাছি ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে  এবং মৌচাকে সংরক্ষন করে। এটি ভালোমানের ঔষধ এবং একটি ভেষজ তরল ও অত্যন্ত সুপেয়। এটি একটি প্রাকৃতিক খাদ্য যা মৌচাকের কর্মী মৌমাছিরা ফুল থেকে নেক্টার সংগ্রহ করে এবং মৌচাকে নিয়ে এসে জমা করে। তারপর নেক্টার মৌচাকের মধ্যে সংরক্ষন করা হয় সেখানে মৌমাছির এনজাইমগুলি জটিল শর্করাকে সরল শর্করাতে রুপান্তরিত করে। 

আরো পড়ুন: উলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম।

মৌমাছিরা নেক্টার থেকে অতিরিক্ত জল বাষ্পীভূত করার জন্য তাদের ডানাগুলোকে ব্যবহার করে। মধু সঠিকভাবে ঘনভূত হয়ে গেলে মৌমাছিরা এটিকে মোম দিয়ে ঢেকে রাখে যাতে পরবর্তীতে খাদ্য উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। মৌমাছিরা নিজেদের খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত মধু সংরক্ষন করে থাকে।

মধুতে বিদ্যমান উপাদানসমূহ

খাটিঁ মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান বিভিন্ন ফুল থেকে মৌমাছিরা যে মধু সংগ্রহ করে এর থাকে প্রায় ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩ শতাংশ সুক্রোজ এব ৫ থেকে ১২ শতাংশ মল্টোজ। এছাড়াও প্রায় ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, প্রায় ২৮ শতাংশ খনিজ লবন এবং প্রায় ১১ শতাংশ বিভিন্ন প্রাকৃতিক এনজাইম। খাটিঁ মধু চর্বি ও প্রোটিনমুক্ত। ১০০ গ্রাম মধুতে ৮৮ ক্যালরি থাকে।

সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার নিয়ম

সকালে খালি পেটে মধু খেলে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হয়। সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার নিয়ম হলো রোজ সকালে ১ থেকে ২ চামচ পরিমান মধু খেতে হবে। এছাড়া রোজ সকালে কুসুম গরম পানির সাথে ১ থেকে ২ চামচ মধুর সাথে হালকা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। 
তাছাড়া প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ থেকে ২ চাম মধুর সাথে সামান্য কালিজিরা খেতে পারেন। আবার শুধ কুসুম গরম পানি দিয়েও মধু খেতে পারেন। এক কোয়া কাচা রসুন ও ১ থেকে ২ চামচ মধু মিশিয়ে একত্রে খেতে পারেন এতে করেও অনেক উপকার পাবেন। এমনকি চিয়া সিডের সাথেও আপনি মধু খেতে পারেন।

ওজন কমানোর জন্য মধু খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকেই চিনি মিশিয়ে চা ও কফি পান করি। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেলে সেটি ওজন কমানোর একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। এই নিয়ম মেনে মধু খেলে এটি ঘুমের প্রথম শরীরকে আরও চর্বি পোড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে আধ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধ চা চামচ মধু ও অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে এটি ওজন কমানোর জন্য সহায়ক হবে।

রাতে মধু খাওয়ার নিয়ম

রাতে মধু খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। তবে রাতে মধু সেবন করে উপকারিতা পেতে হলে রাতের খাবারের ৩ থকে ৪ ঘন্টা পর মধু খেতে হবে। এক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এতে করে শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কেটে যাবে। রাতে ঘুমের আগে মধু খেলে এটি ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক হবে এবং একই সাথে এটি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্ত রোধ করবে।

শিশুদের মধু খাওয়ার নিয়ম

আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে বাচ্চাদের জন্মের পরে মধু খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। তবে এটি মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয় বরং এটি বাচ্চার জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে। মধুতে ইনফ্যান্ট বটুলিজম নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। এটি সকল মধুতেই থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া প্রাপ্তবয়স্কদের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারে না।

মধু-খাওয়ার-নিয়ম

 তবে যে সকল বাচ্চার বয়স ১২ মাসের কম তাদের কোন ক্রমেই মধু খেতে দেওয়া যাবে না। ১২ মাসের কম বয়সের বাচ্চাদের পরিপাকতন্ত্র সুগঠিত থাকে না যার ফলে ইনফ্যান্ট বটুলিজম নাম ব্যাকটেরিয়া  ১২ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে। এতে শিশু স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে।

আরো পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১০টি উপায়।

তাই বাচ্চাদের মধু খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম হলো বাচ্চার বয়স ১২ মাস হওয়ার পর নিয়মিত অল্প অল্প করে মধু খাওয়ানোর অভ্যাস যেতে পারে। এতে শিশুর কোন শারিরিক সমস্যা হবেনা বরং শিশুর বেড়ে উঠাতে অনেক সাহায্য করবে। এই ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে ১ ড্রপ করে মধু শুরু করতে হবে এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধু খাওয়ার নিয়ম

সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ কিছুু ভুলে যেতে শুরু করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত মধু সেবন করে তাদের স্মৃতিশক্তি খুব ভালো থাকে। বৃদ্ধ বয়সে অনেককে কাশির কারণে ফুসফুসের সমস্যায় পড়তে হয় । এই কাশির সংক্রমন রোধ করার জন্য মধু খুব কার্যকর। তবে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধু খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত। 

সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে মধু খেলে নানা ধরনের উপকার পাওয়া যায়। মধু হলো মহান সৃষ্টিকর্তার দেওয়া একটি প্রাকৃতিক এ্যান্টোবায়োটিক। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। মধুতে বিদ্যমান গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ আমাদের শরীরে তৎক্ষনাৎ এনার্জি যোগায়। এছাড়া মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, অ্যামাইনো এসিড, খনিজ লবন ইত্যাদি।

মানুষ বর্তমানে আগের থেকে বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। এখন প্রায় প্রতিটি মানুষ চিনির ক্ষতি দিক সম্পর্কে জানেন। তাই অনেকে এখন চিনির পরিবর্তে গুড় বা মধু খাওয়ার অভ্যাস করেছে। আবার শীতের সময়  মধু খেলে আপনাকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে। বিভিন্ন গবেষণায় মধুর বিভিন্ন উপকার পাওয়া গেছে। 

সকালে খালি পেটে মধু খেলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। এগুলো হলো:

  • সকালে খালি পেটে মধু খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ফলে বদ হজম থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • মধু আমাদের শরীরের রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে । যারা রক্ত শূণ্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য মধু অত্যন্ত উপকারি।
  • সকালে খালি পেটে মধু খেলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর হয়।
  • মধু আমাদের তাৎক্ষনিৎ শক্তি যোগায়, শারিরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শরীর তাপ উৎপন্ন করে থাকে।
  • মধুতে রয়েছে বিভিন্ন খনিজ উপাদানসমুহ। নিয়মিত মধু পানে আমাদের শরীরের এসব খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরন হয়। (যেমন -কপার, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি)
  • মধুতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
  • মুখের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ক্ষতের চিকিৎসায় মধু খুবই কার্যকরী। তাছাড়া মধু আমাদের দাঁতকে মজবুজ করে থাকে।
  • সাইনাসের মত সমস্যায় মধু দারুন কার্যকারি একটি উপাদান। যাদের সাইনাসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত সকালে মধু পান করলে উপাকার পাবেন।
  • নিয়মিত খালি পেটে মধু খেলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। যাদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও ফুসফুসের সমস্যা আছে তারা মধু খেতে পারেন এটি আপনাদের জন্য উপকারী একটি মেডিসিন হতে পারে। তাছাড়া যারা মৌসুমী সর্দি, কাশিতে ভুগেন তাদের জন্যও মধু খুবই উপকারী।
  • মধু আমাদের শরীরে রক্তনালী প্রসারনের মাধ্যমে হৃদপেশির কার্যক্রমে বিশেষভুমিকা পালন করে থাকে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে থাকে।
  • নিয়মিন মধু পান করলে রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমানো, ব্লাড পেসার নিয়ন্ত্রন সহ নানা প্রকার রক্তের সমস্যা থেকে মক্তি পাওয়া যায়।
  • মধু শিশুদের হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে।
  • মধু দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করে ।
  • নিয়মিন মধু পান করলে বাত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • শাররিক ও যৌন দুর্বলতা দূর করতে মধুর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা।
  • নিয়মিত মধু খেলে মধুতে বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।
  • মুখের ব্রন ও চুলের জন্যও মধু ব্যবহারে বিশেষ সুফল পাওয়া যায়।
  • মধু অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, রোগ সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অসুস্থ হওয়া থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে।

সকালে খালি পেটে মধু ও কালিজিরা খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে মধুর সাথে কালিজিরা খেলে আমরা আরও অনেক উপকার পাব। যেমন:

  • মধুর সাথে কালিজিরার মিশ্রণ আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুনে বাড়িয়ে দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
  • সকালে নিয়মিত কালিজিরার সাথে মধু খেলে বাত ব্যথা উপশম হয়।
  • সকালে কালিজিরার সাথে মধু  খেলে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • সকালে খালি পেটে কালিজিরার সাথে মধু খেলে আপনার ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রেণে থাকবে।
  • সকালে খালি পেটে কালিজিরার সাথে মধু খেলে শরীরের রক্ত শূণ্যতা দূর করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
  • কালো জিরা হলো মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ।
  • সকালে কালো জিরার সাথে মধু খেলে আমাদের হৃদরোগ জনিত অনেক সমস্যা অধিকাংশে কমিয়ে দেয়।

সকালে খালি পেটে মধু ও রসুন খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে মধু ও রসুন খাওয়া খুবই উপকারী। মধুতে থাকা অ্যাসিলিন নামক উপাদান শরীরের কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে এবং রক্ত জমাটে সাহায্য করে থাকে। রসুনে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের সব ধরণের ইনফেকশন দূর করতে সহায়তা  করে থাকে। নিয়মিন এক কোয়া রসুনের সাথে মধু পান করলে শরীরের বিভিন্ন ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সহায়তা করে থাকে। প্রতিদিন সকালে তিন চার কোয়া রসুন কুচি করে নিয়ে মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে শরীর ঝরঝরে থাকবে এবং সারাদিন কোন ক্লান্তি আসবে না। 

তাছাড়া রসুন ও মধু একসাথে খেলে রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। তাছাড়া এটি হৃদরোগে বিভিন্ন সমস্যায় উপকার করে থাকে। তাই আপনি যদি রক্ত পরিষ্কার ও হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যায় উপকার পেতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রসুন ও মধু খেতে পারেন। এটি আপনার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সারাদিন আপনার শরীরকে সতেজ রাখবে।

সকালে খালি পেটে গরম পানিতে মধু খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানিতে মধু খেলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। যেমন:

  • সকালে খালি পেটে গরম পানিতে মধু খেলে তা হজমে সাহায্য করে এবং বদহজম দুর করে।
  • কাশি ও ঠান্ডা ভাব থেকে মুক্তি করে থাকে।
  • মৌসুমী সর্দি কাশি থেকে রক্ষা করে।
    মধু-খাওয়ার-উপকারিতা

  • সকালে খালি পেটে গরম পানির সাথে মধু পান করলে এটি ত্বকের জন্য দারুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • সকালে হালকা গরম পানির সাথে মধু পান করলে কোষ্ঠকাঠিণ্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • সকালে কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।

  • সকালে কসুম গরম পানির সাথে ১ থেকে ২ চামচ মধুর মিশিয়ে তার সাথে হাল্কা লেবুর রস মিশিয়ে তা পান করলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

চিয়া সিডের সাথে মধু খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে সচিয়া সিডের সাথে মধু পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতা ও অম্লতা দূর হয়। তাছাড়া এটি রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে থাকে। এমনকি এটি রক্তশূণ্যতা দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।  আবার চিয়াসিডের সাথে নিয়মিত মধু পান করলে তা দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া যারা অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত অনুভব করেন অথবা সকালে হাঁটতে বের হন কিংবা ব্যায়াম করেন তারা চিয়া সিডের সাথে মধু মিশেয়ে খেতে পারেন।

আরো পড়ুন: কারিপাতার উপকারিতা।

চিয়া সিডের সাথে মধুর মিশ্রন খেলে আপনার অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হওয়া দূর করবে এবং আপনার শরীরকে সতেজ ও ফুরফুরে রাখবে সারাদিন। যারা মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন, তারা নিয়মিত চিয়া সিডের সাথে নিয়মিত মধু মিশেয়ে সকালে অথবা রাতে খেতে পারেন। তাতে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে।

অতিরিক্ত মধু খাওয়ার ‍অপকারিতা

মধু পানীয় হিসেবে এবং রোগ প্রতিষেধক হিসেবে অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত খেলে সেটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। অতিরিক্ত মধু সেবন করলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। নিন্মে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তুলে ধরা হলো:

  • প্রতিদিন অতিরিক্ত মধু সেবন করলে পেট ব্যথা হতে পারে। তাই যারা নিয়মিত মধু সেবন করেন তাদের পরিমিত আকারে মধু সেবন করা উচিত।
  • ওজন কমাতে মধুর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে অতিরিক্ত মধু সেবন করলে সেটি ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। কাজেই যারা ওজন কমাতে আগ্রহী তারা পরিমিত আকারে মধু সেবন করবেন।
  • মধুতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তবে অত্যাধিক মধু সেবন করলে সেটি হাইপারটেনশন এর ঝুঁকি বাড়ার কারন হতে পারে।
  • অতিরিক্ত মধু পান করা দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। এটি দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং দাঁতকে ভিতর থেকে দুর্বল করে তোলে। দাঁত বিবর্ণ হয়ে যায়। মধু সামান্য এসিডিক হওয়ার কারণে এটি ক্যাভিটি হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

লেখকের মতামত

নিয়মিত মধু খেলে প্রাকৃতিক ভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে। আলাদা কোন মেডিসিন এর প্রয়োজন পরে না। তবে মধু সেবনে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতিরিক্ত হারে মধু সেবন কোন ভাবেই কাম্য নয়। নিয়মিত পরিমিত আকারে মধু সেবন করা যেতে পারে। তবে গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মধু খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত হবে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন পরামর্শ ও মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলীবিডিটেক নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url